বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তোর বোবা কাপড়গুলোও বলে, ‘মা’ তুমি কেঁদো না নিজেকে একলা ভেবে

সাহিত্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

আসসালামু আলাইকুম। 

প্রিয় মারজুক, 

কেমন আছিস বাবা? নিশ্চয়ই ভালো। আমিও তোর দোয়া, ভালোবাসা ও ছোট ছোট স্মৃতিতে ভেসে আছি গভীর জলের সুখকর শঙ্খের রাজ্যে। যা আমার বেঁচে থাকার অভয়। শরতের রৌদ্র উজ্জ্বল নীলাভ আকাশের মতো শান্ত যেন তোর জীবন হয় সেই দোয়াই করি। 

আর হ্যাঁ,

নতুন বায়ুতে দম নিতে কেমন লাগছে? গাছ, ঘাস, ফুল, একলা আকাশ, মাঝরাত কাটছে তো বেশ? আমি মাঝরাতে তোর শোবার ঘরে তোকে খুঁজি মুখ লুকিয়ে আঁচলে। তুইও কি আঁতকে উঠিস মাঝরাতে ঘুমের ঘোরে আমার মুখটি দেখতে না পেয়ে? যাই হোক, ভালো থাকিস নতুন রুপে নতুন করে। 

ডানপিটে ছেলেকে খেলার মাঠ থেকে আর আনা হবে না ডান্ডা মেরে। জাঙ্গিয়া পেতে বক পাখি ধরা হবে না আর ভরদুপুরে আউশের কাঁদামাখা আল বেয়ে। মাটির সুধা গন্ধ মেখে নামবি কবে আবার ঐ কাঁদাজলে? বর্ষার দুপুরে ভেলায় চড়ে থৈথৈ মাঠে ডোবাডুবির হৈচৈ এখন দুঃস্বপ্ন। ম্যাচের প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেট কেটে কী যেন ঐ খেলার নাম আমার ঠিক মনে আসছে না। তা যা-ই হোক। মনে আছে তোর?

তোকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেই ঘুমিয়ে যেতাম আর তুই পাশ থেকে উঠে লুকিয়ে গিয়ে খেলতিস আমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, ক্রিকেট, ফুটবল, মার্বেল আর ঐ ডাংগুলি খেলা। বকুনি-ঝকুনি দিয়ে ফিরিয়ে আনতাম তক্ষুণি ঘরে। ঘুড়ির লাটাইটা এখনো আছে পরম যত্নে আমার কাছে; ঘুড়িটা সেই কবেই কেটে গেছে দূর আকাশে।

হ্যাঁ রে মারজুক,  তোর কাপড়গুলো কাল ভাঁজ করতে যেয়ে পুরোনো কাপড় ক'খানা ফেলতে চেয়েছিলাম বহুত করে। ফেলতে পারিনি কারণ দুষ্টু ছেলের ঘামের ঘ্রাণ যে আমায় নিষেধ করে। বোবা কাপড়গুলোও আমার সাথে সঙ্গোপনে কথা বলে। "মা" তুমি কেঁদো না নিজেকে একলা ভেবে। তোর স্মৃতিরাও আমার সাথে দুষ্টু সুরে গল্প করে।

"তুই যে আমার দুষ্টু ছেলে 

রাগলে আকাশ থমকে পড়ে 

চারদিকটা নিঃসঙ্গ লাগে!"

দোয়া করি তুই তোর স্বপ্নকে নয়, স্বপ্ন তোকে ছোঁবে, যেমন করে বৃষ্টি ছোঁয় জমিনের বুক। নামাজ পড়িস, সততায় থাকিস। পত্রের উত্তরের আশায় রইলাম। আশাহত করিস না আমায়।

-- ইতি,

তোর মনি "মা"

শাহিনুর পারভীন 

নরসিংদী  

এস/ আই. কে. জে/ 


মা দুষ্টু ছেলে

খবরটি শেয়ার করুন